Labels

Friday, 3 February 2017

বিজ্ঞান বিষয়ক গল্পঃ রসুনের গন্ধ

সেদিন দুপুরে হটাত মিঃ দাস ফোন করলেন আমাকে দেব্রাজপুরের হত্যাকাণ্ড সমাধানের পর তার বেশ নামডাক হয়েছিল
কাল গোরখাপারা স্ট্রিট বাসস্টান্ড এর কাছে অপেক্ষা করবে, ঠিক বিকাল টেয়, হাতে একটা নতুন কেশ পেয়েছি। হয়ত তুমি আমার সাহায্য করতে পারবে।“- বলেই ফোনটা কেটে দিলেন। পরদিন প্রায় কিমি. হেটে পৌঁছলাম বাসস্টান্ড , দেখলাম মিঃ দাস আগে থেকেই সেখানে অপেক্ষা করছিলেন। বললেন, “ আমাদের বাস ধরে মুকুন্দপুর যেতে হবে কিছুক্ষনেই বাস আসতে আমরা চেপে পরলাম তাতে
·         কেসটা ঠিক কি নিয়ে , আমি বললাম
·         ক্লায়েন্ট তো বললেন আগুন লাগা নিয়ে
·         তবে তো ফায়ার ব্রিগেড ডাকতে হয়, গোয়েন্দা কেন?
·         সেটা তো ওখানে গেলেই জানা যাবে


মুকুন্দপুর নেমে আবার ট্যাক্সি করে কিমি. দূরে পৌঁছলাম এক বড় বাড়িতে। বেল বাজালাম। কিছুক্ষনেই একজন ভেতরে নিয়ে গেলেন, তারপর আমাদের বসতে বলে নিজেও বসলেন
·         আপনিই কি কাল ফোন করেছিলেন? প্রশ্ন করলেন মিঃ দাস
·         হাঁ
·         তবে এবার দেরি না করে পুরো ঘটনাটা খুলে বলুন
তিনি, মানে অলোক ঘোষ, আবার বলা শুরু করলেন
আমার সব কাগজপত্র থাকে আলমারিতে, আমার আর আমার ভাইয়ের কাছে থাকে চাবি। কয়েকদিন আগে একটা লটারির টিকিত কিনি, আর ওটাও রাখি ওই আলমারিতেই। টাকা পয়সা খুব কম থাকে, যা আছে সব বাঙ্কে। ভাই দাস কেমিকেলস কাজ করে। তারও সব কাগজপত্র থাকত ওই আলমারিতেই। ব্যাপারটা ঘটার ঠিক আগের দিন ভাই সব কাগজ বের করে নেয় সেখান থেকে। তাই তার কোন ক্ষতি হয়নি। পরদিন দেখি কাগজয়ালা কাগজ দিয়ে যায়নি, এদিকে তাকে ফোন করতে সে বলল, “ আরে না বাবু, কাগজ তো দিয়ে গেছি পরদিন সকালে ফোন এল, “ আরে মশাই কি হল, কাল কাগজ দেখেননি নাকি। আরে আপনি লটারিতে কোটি ১১ লক্ষ টাকা জিতেছেন। আমি তারাতারি আলমারি খুলে টিকিট টা বের করলাম, দেখলাম সবই যেন কেমন ভিজে ভিজে লাগছে। তার পর কি হল আপনি বিশ্বাস করবেন না। হাতের টিকিট টায় এমনি এমনি আগুন লেগে গেল। সাথে সাথেই গোটা আলমারি পুরে ছারখার হয়েগেল। আমার সব জিনিস পুরে গেল
কথাটা শেষ করেই তিনি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন। মিঃ দাস ঘুরে ঘুরে সব ঘরগুলো দেখলেন। এমন কিছুই পাওয়া গেল না সেখানে। শেষে গেলাম ছাতে। সেখানে শুধু একটা ট্যাঙ্ক, আর একটা গুদাম। ট্যাঙ্ক টা ফাঁকা, আর গুদাম ঘরে কিছু উরান তার, গজালের বাক্স, পুরান সোলা আর পিচবোর্ড, গাছে জল দেবার পাইপ, একটা ভাঙ্গা ফটো আছে। ইতিমধ্যে দেখি চাকরটাও ছাতে উঠেছে। এরপর ভদ্রলোকআমি একবার লটারির অপিসে যাচ্ছি”, বলেই ছুটে চলে গেলেন নিচে। আমরাও নামলাম। নিচে দেখি একটা কুকুর জলের ট্যাঙ্ক এর কাছে এসে কি যেন শুঁকছে। নিচের েই ট্যাঙ্কটিতে আগে পৌরসভার জল জমা হয়, তারপর সেটাকে পাম্প করে ছাদের ট্যাঙ্ক তোলা হয়। ইতিমধ্যেই দেখি কুকুর চলে গেছে, আর ভদ্রলোক সারা ঘরে রুম ফ্রেশনার স্প্রে করছেন। মিঃ দাস যেন অনেক্ষন কি ভাবলেন তারপর আমার কানে কানে বললেন, “তুই তারাতারি পুলিশ ডেকে আন, যেখান থেকে পারিস তারপর ঘশবাবু কে বললেন,
, ওর একটা বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছে, এখুনি ফিরে আসবে, েই কাছেই বাড়ি
আমি পুলিশ কে ফোন করলাম, তারপর দল্বল নিয়ে নিঃশব্দে বাড়ি ঘেরাও করলাম। আগে আমি নিজে বাড়ির ভেতর ঢুকলাম। দেখি মিঃ দাস আর ঘোষবাবু চা খাচ্ছেন। হটাত আমাকে দেখেই তিনি উঠে দাঁড়ালেন, আর ঘোষ বাবুর কানের তলায় সজোরে কশালেন এক চর !! তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। আমি তো আঁতকে উঠলাম। কি হল ব্যাপারটা?

পুলিশ ততক্ষণে ঘরে এসে পরেছে
-catch him, গর্জে উঠলেন মিঃ দাস
এবার তিনি মাটির নিচের ট্যাঙ্ক টা খুললেন।আঁতকে উঠলাম আমরা সবাই। ওখানে পরে আছে একটা মৃতদেহ ! পুলিশ সেটাকে তুলে আনলেন, ততক্ষণে ঘোষ বাবুর জ্ঞান ফিরেছে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেনএবার আমি বলি ঘটনা টা কি হয়েছে”, বলতে শুরু করলেন মিঃ দাস-
এনার ভাই, মানে আরকি যার মৃতদেহ তিনিই কাল আমাকে ফোন করেছিলেন, বাড়িতে আগুন লাগা নিয়ে। আগুন টা লাগিয়ে ছিলেন ওনার দাদা, মানে েই জোচ্চোর টা। দাস কেমিকেলস এও ইনিই কাজ করতেন। ভায়ের ক্ষতি করতে প্রথমে নিজের জিনিস আলমারি থেকে সরিয়ে নেন, তারপর জল আর ফসফরাসের মিস্রন স্প্রে করেন আলমারিতে। ফসফরাসের কথাটা ঘরে রসুনের গন্ধ থেকেই আন্দাজ করেছিলাম। লটারিও এনার ভাই জেতে। ফসফরাস বায়ুর সংস্পর্শে আসতেই জ্বলে ওঠে, আগুন লাগে অদ্ভুত ভাবে
এবার মৃতদেহর কথায় আসি। ছাতে দেখি চাকরটার বুক পকেটে ১০০ টাকার নোট গোঁজা। তখনি বুঝি সেটা ঘুষ ছিল। কুকুর টাকে দেখে বুঝি কিছু একটা গন্ধ পেয়েছে, আর মিঃ ঘোষ সেই টা ঢাকার জন্য রুম ফ্রেশনার স্প্রে করছেন। বাকিটা কল্পনাবলে বুঝি যে গোয়েন্দা কে খবর দেওয়া হয়েছে বলে দাদা, ভাইকে খুন করে। আর এনার বাদবাকি কথা বানানো, আমাকে তদন্তে ফাসিয়ে রাখার জন্য

ইতিমধ্যেই দেখলাম চাকরটা ধরা পরেছে। মিঃ দাস ঘোষ বাবুর কাছে গিয়ে বললেন, “ আমার পারিশ্রমিকটা দিন”, বলেই গলার সোনার চেন টা খুলে নিয়ে নিলেন। অপরাধি কটমট করে তাকাছে মিঃ দাস এর দিকে, যেন এখুনি মেরে ফেলবে। পুলিশ দুজনকেই ধরে নিয়ে গেল, আর আমরা ফিরলাম বাড়ি

No comments:

Post a Comment

Thanks For Your Comment.(Farid)